July 14, 2024
|
চৌদ্দ বছর বয়সী সদা হাস্যোজ্জ্বল তাহমিনার (ছদ্মনাম) আর দশজন কিশোরীর মতোই স্বপ্ন ছিলো। কিন্তু যখন সে একটি ছেলের প্রেমে পড়লো এবং ছেলেটির ক্রমাগত অনুরোধে তার সাথে কয়েকটি অন্তরঙ্গ ছবি শেয়ার করলো, তার সেই স্বপ্ন নিমিষেই শেষ হয়ে গেলো। ছেলেটি এরপর তাকে আরও ঘনিষ্ঠ হওয়ার জন্য অনবরত চাপ দিতে থাকলো এবং এটি তাহমিনার জীবন পুরোপুরি বদলে দিলো।
ভাগ্যক্রমে, শিশুদের সহায়তায় চালু করা হেল্পলাইন ১০৯৮ সম্পর্কে তাহমিনার জানা ছিলো এবং বৈশ্বিক মহামারি চলাকালীন সে এই হেল্পলাইনে কল করে। প্রথমে তার মনে বেশ অনিশ্চয়তা আর ভয় কাজ করলেও কয়েকবার কল করার পরে সে স্বস্তি ও আশ্বাস পায়, যা তাকে খোলাখুলিভাবে কথা বলার সাহস দেয়। সে কল সেন্টারের কাউন্সেলরের সাহায্য চায়। কল সেন্টার এজেন্ট তাকে আশ্বস্ত করে এবং তাকে সহায়তা প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করে।
তাহমিনার কাহিনী নতুন কিছু নয়। সে জানায় যে, লকডাউনের সময় তার ১৬ বছর বয়সী একটি ছেলের সাথে সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং কথা বলার এক পর্যায়ে সে একটি জনপ্রিয় ডিজিটাল যোগাযোগ অ্যাপের মাধ্যমে তার দু’টি ব্যক্তিগত ছবি ছেলেটির সাথে শেয়ার করে। সে যেহেতু ছেলেটিকে বিশ্বাস করতো এবং ছেলেটির সাথে তার ভালোবাসার সম্পর্ক ছিলো, সে কখনোই ভাবেনি যে এতে কোনো প্রকার ঝুঁকি রয়েছে। কিন্তু ছবি শেয়ার করার পর পুরো চিত্র বদলে গেলো। ছেলেটির চাহিদা আরও বেড়ে যায় এবং সে সম্পর্কে আরও ঘনিষ্ঠতা চায়। তার এই চাহিদা পূরণে তাহমিনা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে না এবং তাহমিনা এতে অস্বীকৃতি জানায়। এটি ছেলেটিকে আরও নাছোড়বান্দা করে তোলে এবং তার কথামতো না চললে সে তাহমিনার ছবি ডিজিটাল মাধ্যমে ভাইরাল করে দিবে এমন হুমকি দিতে শুরু করে। এই সময়ে তাহমিনার অনলাইন সেইফটি ব্যানারে দেখা হেল্পলাইন নম্বরের কথা মনে পড়ে। এই ব্যানারটি ছিলো গ্রামীণফোন ইউনিসেফের অনলাইন নিরাপত্তা প্রকল্পের কো-ব্র্যান্ডেড প্রচারণার অংশ।
বিস্তারিত শোনার পর সাইকোসোশ্যাল কাউন্সেলর, সমাজকর্মী এবং ম্যানেজার ছেলেটির সাথে যোগাযোগ করার সিদ্ধান্ত নেন। তারা তাকে তার অসদাচরণের আইনি এবং সামাজিক পরিণতি সম্পর্কে অবহিত করে এবং তার কাউন্সেলিং করে। কয়েকটি সেশনের পর সে এ ব্যাপারে সচেতন হয় এবং তার আচরণের জন্য লজ্জিত হয়। সে নিজের আচরণ পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতিও দেয়।
এরপর হেল্পলাইন থেকে তাহমিনার সাথে কয়েকবার যোগাযোগ করা হয় এবং জানা যায় যে, ছেলেটি বেশ ভালো আচরণ করছে এবং এরপর তাকে আর বিরক্ত করেনি। তাহমিনা চাইল্ড হেল্পলাইন ১০৯৮ কে তাদের সার্বিক সহায়তার জন্য এবং অনলাইন অপব্যবহারের এই হয়রানি কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করার জন্য ধন্যবাদ জানায়। তারপর তাকে অনলাইন নিরাপত্তা বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয় এবং সে ডিজিটাল স্পেসে সতর্ক এবং স্মার্ট হওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়।
একটি পূর্ণাঙ্গ শিশু সুরক্ষা ব্যবস্থার অংশ হিসেবে, বাংলাদেশ সরকার ২৪ ঘণ্টা টোল-ফ্রি টেলিফোন সেবার মাধ্যমে শিশু সুরক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ডকে বেগবান করতে এবং শিশু ও তাদের পরিবারকে সহায়তা প্রদানে চাইল্ড হেল্পলাইন চালু করেছে। এসব কার্যক্রম সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি কল সেন্টার এজেন্টের সংখ্যা বাড়াতে কাজ করে। কল সেন্টার এজেন্ট থেকে শুরু করে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শদাতাদের প্রশিক্ষণ প্রদান কিংবা কেন্দ্রের মূল অপারেশন - ইউনিসেফের সাথে পার্টনারশিপে গ্রামীণফোন এই সেবার মানোন্নয়নে সকল প্রকার সহযোগিতা প্রদান করছে।
July 14, 2024
|
July 14, 2024
|
©2024 গ্রামীণফোন লিমিটেড টেলিনর গ্রুপের সদস্য