নিরাপদ ডিজিটাল পার্টিসিপেশন এবং মানসম্মত শিক্ষায় অ্যাক্সেস প্রদানের লক্ষ্যকে প্রেরণা হিসেবে নিয়েই অনলাইন শিশু সুরক্ষা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
২০১৪ সাল থেকে আমরা, শিশুদের নিরাপদ ইন্টারনেট পরিবেশ সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য এবং পিতামাতা, অভিভাবক এবং শিক্ষকদের এ বিষয়ে সংবেদনশীল করার জন্য দেশব্যাপী স্কুলগুলোতে আউটরিচ প্রোগ্রাম পরিচালনা করে আসছি।
২০১৮ এবং ২০১৯ সালে, ইউনিসেফের সাথে পার্টনারশিপ আমাদের প্রায় ১০ লক্ষ শিক্ষার্থীকে সরাসরি প্রশিক্ষণ প্রদানে এবং ২৭০,০০০ এরও বেশি বাবা-মা, শিক্ষক এবং অভিভাবকদের সচেতন করতে সক্ষম করেছে। সেই সাথে, চাইল্ড হেল্পলাইন ১০৯৮ অনলাইন সুরক্ষাসহ যেকোনো শিশু সুরক্ষা ইস্যুতে সহায়তা প্রদান করে আসছে। এছাড়াও, দেশব্যাপী পরিচালিত ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে ৫ কোটিরও বেশি ব্যক্তিকে ইন্টারনেট ব্যবহারে সুরক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন করা হয়েছে। মহামারির সময়ে শিশুদের শিক্ষার মাধ্যম অফলাইন থেকে অনলাইন প্লাটফর্মগুলোতে শিফ্ট হওয়ায় ইন্টারনেট সুরক্ষার একটি প্রয়োজনীয়তা তৈরি হয়েছে। ভার্চুয়াল ক্লাসরুম, ভিডিও কলিং, অনলাইন গেমিং, বিনোদন এবং সামাজিক মাধ্যমগুলো শিশুদের চিন্তাভাবনাকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে পারে, যা শিশুদের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। অনলাইনে শিশুদের জন্য উপযোগী নয় এমন কন্টেন্ট, সাইবার বুলিং, অনলাইন স্ক্যাম, ভাইরাস এবং আইডেনটিটি থেফ্ট ইত্যাদি সমস্যার মুখোমুখি হতে পারে শিশুরা। আমরা যদি আমাদের ডিজিটাল মাধ্যমে শিশুদের আবাধ বিচরণ নিশ্চিত করতে চাই তবে আমাদের সচেতন হতে হবে এবং অনলাইনে শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
গ্রামীণফোন অনেক বছর ধরে ‘ঠিক লাইনে অনলাইনে’ সোশ্যাল ক্যাম্পেইন এবং একইসাথে সারা বাংলাদেশের স্কুলগুলোতে অন-গ্রাউন্ড প্রশিক্ষণ সেশনের মাধ্যমে শিশুদের নিরাপদ অনলাইন অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করার উপায় সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য সক্রিয়ভাবে প্রচারণা চালিয়ে আসছে।
যেহেতু, ইন্টারনেট সংযোগ কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যে বিশ্বজুড়ে শিশুদের জন্য শিক্ষার ধারাবাহিকতা রক্ষার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে, সেহেতু নিরাপদ অনলাইন পার্টিসিপেশন নিশ্চিত করতে শিশু অনলাইন সুরক্ষা কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় - "Be Smart, Use Heart" প্রোগ্রাম পরিচালনা করছে গ্রামীণফোন। প্রোগ্রামটির লক্ষ্য হলো লিঙ্গ, অবস্থান বা আর্থ-সামাজিক অবস্থা নির্বিশেষে সবার জন্য একটি নিরাপদ শিক্ষার স্থান তৈরি করা। এখনই সময় শিশুদের অনলাইন সুরক্ষা গাইডলাইন সম্পর্কে যথাযথ ধারণা প্রদান করার।
২০২০ সালে প্রোগ্রামটি নিম্নলিখিত মাইলফলকগুলো স্পর্শ করেছে:
ইন্টারনেট হচ্ছে সকলের জন্য জ্ঞান, যোগাযোগ ও অগ্রগতির অন্যতম উৎস। তা সত্ত্বেও, সব বয়সের শিশুরা ইন্টারনেটে ক্ষতিকর কন্টেন্ট, শোষণ এবং অপব্যবহারের ঝুঁকিতে রয়েছে। তাদের ডিজিটাল স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ না করে দ্রুত এটি থামানো দরকার। যেহেতু শিশুরা ভুল তথ্য থেকে প্রভাবিত হওয়ার পক্ষে সবচেয়ে বেশি সংবেদনশীল, তাই তাদের অনলাইনে সুরক্ষিত থাকা সম্পর্কে সচেতন করা অত্যন্ত জরুরি ছিল। “ঠিক লাইনে Online-এ” প্লাটফর্মটি অনলাইন সেফটি প্রোমোট করে শিশুদের এবং তাদের অভিভাবককে সম্ভাব্য অনলাইন থ্রেট এবং তারা যদি এই ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হয় তবে সেগুলো মোকাবেলার উপায় সম্পর্কে সচেতন করে তোলে।
গ্রামীণফোন ফেসবুক, ইউটিউব এবং বায়স্কোপে একটি ওয়েব সিরিজ চালু করেছে যাতে শিশুরা এবং প্রাপ্তবয়স্করা আনন্দের সাথে ইন্টারনেট সুরক্ষা সম্পর্কে জানতে পারে। এজন্য ‘ঠিক লাইনে online-এ’ গেম শো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় যেখানে সেলিব্রিটি এবং কমিউনিটি লিডারদের অংশগ্রহণের জন্য এবং অনলাইন সুরক্ষায় সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ করা হয়েছে।
পপ কালচার শিশুদের কীভাবে অনলাইনে হুমকি থেকে সুরক্ষিত রাখতে পারে সে সম্পর্কে গাইড করার জন্য কমিক স্ট্রিপ, পিআর আর্টিকেল এবং এমনকি একটি বিনোদনমূলক পাপেট শো প্রচার করা হয়েছে। আমাদের শিশুদের নিরাপদ রাখতে এবং অনলাইনে মুখোমুখি হওয়া যেকোনো অসঙ্গতির জন্য অভিভাবক অথবা বড়দের কাছে পরামর্শ নিতে উত্সাহিত করতে হবে। সর্বোপরি, ইন্টারনেটের বিস্তৃত বিশ্বে আমাদের ভবিষ্যৎ অর্থাৎ শিশুদের সুরক্ষিত রাখতে হবে।
©2024 গ্রামীণফোন লিমিটেড টেলিনর গ্রুপের সদস্য